রক্ষা বন্ধন কি? বাঁধুন স্ব-রক্ষার সুরক্ষা বন্ধন

বাঁধুন স্ব-রক্ষার সুরক্ষা বন্ধন :-* ❣

*"রক্ষা বন্ধন"* - এই উৎসবটি শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে মানানো হয়। ভারতবাসীদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব। বোনেরা হৃদয় থেকে এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকে এবং এই দিনটিতে ভাইদের হাতে রক্ষাকবচ বেঁধে দেয়, যাকে *রাখী* বলা হয়ে থাকে। বাজারে রাখীর দোকানগুলি এমন ভাবে সেজে ওঠে, যেন মনে হয় কোন মেলা বসেছে। রক্ষা বন্ধন হিন্দুদের অন্যতম প্রধান উৎসব। পরবর্তীকালে এই রক্ষা বন্ধন পর্বটি *রাখী* নামে পরিচিত হয় । এই *রাখী উৎসব* কবে থেকে মানানো হচ্ছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। কিন্তু *ভবিষ্য পুরাণ* এর একটি কথাতে এর উদাহরণ অবশ্য পাওয়া যায়। একবার বিষ্ণু, বামন অবতার ধারণ করে, বলি রাজার অভিমান কে চূর্ণ-বিচূর্ণ করেছিলেন। এইজন্য এই উৎসব *"বলেয়"* নামেও প্রসিদ্ধ। মহারাষ্ট্রে "নারিকেল পূর্ণিমা" বা "শ্রাবণী" নামেও এই উৎসব বিখ্যাত । এই দিন ওখানকার মানুষ-জন, নদী বা সমুদ্রের তটে গিয়ে নিজেদের পৈতা পরিবর্তন করে আর তার সাথে সাথে সমুদ্রের পূজাও করে।

*রক্ষা বন্ধন* সম্বন্ধে এক অন্য পৌরাণিক কথাও প্রসিদ্ধ আছে । দেব আর দানবের ভয়ংকর যুদ্ধে, দেবতারা পরাজিত হয়ে যখন দেবরাজ ইন্দ্রের শরণাপন্ন হয়েছিলেন, তখন ইন্দ্রানী দেবী দেবতাদের ভয়ে ভীত দেখে, তাদের হাতে রক্ষা সূত্র বেঁধে দিয়েছিলেন। এর দ্বারা দেবতাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং দেবতারা দানবদের উপর বিজয় প্রাপ্ত করতে সমর্থ হয়। তখন থেকেই রাখি বন্ধন প্রথা শুরু হয়।

দ্বিতীয় মান্যতা অনুসারে, ঋষি মুনি দের উপদেশের পূর্ণাহুতি এই দিন হয়ে থাকে। তারা রাজাদের হাতে এই দিন রক্ষা সূত্র বেঁধে দিতেন। এই জন্য আজও ব্রাহ্মনেরা তাদের যজমানের হাতে রাখী বেঁধে দেন।

*রক্ষা বন্ধন* এই উৎসবটি ভাই বোনের পবিত্র প্রেমের প্রতীক। এইদিন বোনেরা অনেক ভালোবাসার সাথে তাদের ভাইদের হাতে রাখী বেঁধে দেয় এবং তাদের জন্য অনেক শুভকামনাও করে। ভাইরা নিজেদের বোনেদেরকে যথাসাধ্য উপহার দেয়। অতীত হয়ে যাওয়া শৈশবের আনন্দ পুনরুজ্জীবিত হয় ওই দিন।

রাখীর এই সুতোর মধ্যে অনেক কিছুই বলিদান থাকে। চিতোরের রাজমাতা কর্মবতী মুঘল সম্রাট হুমায়ূনকে রাখী পরিয়ে ভাই বানিয়ে ছিলেন এবং হুমায়ুনও নিজের বোন কর্মবতীকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য চিতোর পৌঁছেছিলেন। আজকাল তো বোন ভাইকে রাখি পরিয়ে দেয় আর ভাই বোনকে কিছু উপহার দিয়ে কর্তব্য পূরণ করে। কিন্তু আজ মানুষ এই কথাটি ভুলে গেছে যে, রাখীর সুতোর সম্বন্ধ, মনের পবিত্র ভাবনা থেকে হয়ে থাকে।

এসব তো হল পরম্পরা ধরে চলে আসা ধারণা বা মান্যতার কথা। এই আধারেই আমরা একে অপরকে রক্ষা সূত্র বেঁধে থাকি। কিন্তু এই রকম করেও আজ আমরা অপরকে রক্ষা করতে পারছি কি? আজ পরিবেশের অবস্থা খবর কাগজ বা কোন মাধ্যম দ্বারা জানা যায় । চারিদিকে কি রকম ঘৃণ্য ঘটনা ঘটে চলেছে। ব্যস্ এই গ্রন্থি গুলিকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা আপনার মনোযোগকে একাগ্র করতে চাই.....

বাস্তবে মনুষ্য নিজের মধ্যে নিহিত মনোবিকারের বশ হয়ে এইরকম ঘৃণ্য ঘটনা করার জন্য প্রেরিত হচ্ছে। কেবলমাত্র সূত্র বন্ধনেই তাদের মনোবৃত্তি পরিবর্তন করা সম্ভবপর নয়, এই জন্য মনকে শুদ্ধ করার প্রক্রিয়া একমাত্র আধ্যাত্মিক জ্ঞানের মাধ্যমেই করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আধ্যাত্মিকতার সম্বন্ধে সঠিক তথ্য না তো কারোর জানা আছে, আর না তার পদ্ধতি জানা আছে, কিভাবে করতে হয়। তো এই রকম পরিস্থিতিতে মনোবৃত্তিকে শুদ্ধ করার জন্য পরমাত্ম জ্ঞানই এমন এক মাধ্যম, যার দ্বারাই এই সকল বিকৃতি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আমরা আপনাকে একটা খুশির খবর জানাচ্ছি যে, কালচক্রে এখন পরমাত্মা দ্বারা মানব মনের দূষিত বৃত্তি গুলিকে পরিবর্তনের সময় পূর্বের আট দশক ধরে চলে আসছে। তো আপনিও কি চান যে, আপনার মন শুদ্ধ এবং শ্রেষ্ঠ ভাবনা দিয়ে পরিপূর্ণ থাকুক। যাহার দ্বারা আমরা নিজেরাই নিজেদের সুরক্ষা করতে পারব সাথে সাথে অপরকেও........

*তাহলে আসুন, আপনিও আপনার মনকে শুদ্ধ করুন, নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন এবং পরিবার তথা সমাজের সুরক্ষা কবচ হয়ে তাদেরকেও সুরক্ষিত রাখুন।*

💝 *মধুবন* 💝

👬👭👭👬👫👭👬👫👭

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন