কাককে খাবার খাওয়ালে কি পূর্বজদের খাওয়ানো হয়?

আচ্ছা, আমাদের মুনিঋষিরা কি অজ্ঞ ছিলেন ?*

*তারা কাককে খাবার খাওয়াতে বলতেন । তাঁরা বলতেন, কাককে খাবার খাওয়ালে আমাদের পূর্বজদের খাওয়ানো হয় । তাই কি ? তা নয় । আমাদের মুনিঋষিরা ভুল ছিলেন না । তাঁরা সূক্ষ্ম বুদ্ধি সম্পন্ন ছিলেন ।*

*এই হলো তার সঠিক কারণ ------*

*আপনারা কখনো কি কাউকে বট বা অশ্বত্থ গাছের চারা রোপণ করতে দেখেছেন অথবা নিজেরা লাগিয়েছেন ? অশ্বত্থ বা বটগাছের বীজ পাওয়া যায় কি ? এর জবাব হলো, না । বট বা অশ্বত্থ গাছের কলম যতই রোপণ করুন না কেন, তা লাগবে না, কেননা প্রকৃতি এই দুই উপযোগী বৃক্ষের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রেখেছে । এই দুই বৃক্ষের ফল কাক খায় আর তার পেটেই বীজের অঙ্কুরোদগম হয় । কাকের মলত্যাগের মাধ্যমে সেই বীজ ধরিত্রীর মাটিতে পড়ে, আর তার থেকেই এই দুই বৃক্ষের জন্ম হয় । অশ্বত্থ এমনই এক বৃক্ষ, যা round the clock অক্সিজেনের যোগান দেয়, আর বট হলো এক ঔষধি গুণ সম্পন্ন বৃক্ষ ।*

*তাই দুই বৃক্ষের জন্মের ভারসাম্য রাখতে হলে কাকের মতো পক্ষীর সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয় । তাই কাককে রক্ষা করতে হবে । আর তা কি করে সম্ভব ?*

*স্ত্রী কাক ভাদ্র মাসে ডিম দেয়, আর নতুন প্রজন্মের জন্য উপযোগী এই পক্ষীর পৌষ্টিক আর ভরপুর আহারের প্রয়োজন, তাই মুনিঋষিরা শ্রাদ্ধের সময় কাকের জন্য পৌষ্টিক আহারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন । যাতে কাকের প্রজন্ম রক্ষা পায় ।*

*তাই আমরা যে, পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে কাককে খাওয়ানোর প্রথা পালন করি, তা প্রকৃতির রক্ষণের জন্য নিতান্ত আবশ্যক । আর অশ্বত্থ এবং বট বৃক্ষ দেখলেও আমাদের সেই পূর্বজদের কথা স্মরণে আসবে, যাঁদের কারণে আজও আমরা এই দুই বৃক্ষকে দেখতে পাচ্ছি ।*

*সনাতন ধর্মের নানা প্রথাকে যারা কুসংস্কার বলেন, তারা একটু চিন্তা করে দেখুন, যখন বিজ্ঞান ছিলো না, তখনো এই সনাতন ধর্মই জানতো, কোন রোগের কোন ঔষধি, কোন খাবার খাওয়ার যোগ্য, কোনটা নয় । আমাদের সনাতন ধর্ম হলো অথৈ জ্ঞানের ভাণ্ডার, তার শিক্ষা পদ্ধতির জন্য আমাদের ঋষিমুনিদের প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা উচিত ।*

🙏🙏ওম শান্তি 🙏🙏

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন