রাজযোগ , রাজযোগ মেডিটেশন , আধ্যাত্মিক ব্লগ তথ্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য ১১২
📚 গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য 📚
✨ THE GREAT GEETA ✨
📝NO * ১১২
🌴 ধর্মক্ষেত্র এবং কুরুক্ষেত্রের বর্ণনা 🌴
🌟 ত্রয়োদশ, চতুর্দশ এবং পঞ্চদশ অধ্যায়
🔴🔴🔴🔴🔴🔴🔴🔴
🔵 সবথেকে প্রথম প্রকারের সংস্কার হলো প্রকৃত বা আসল সংস্কার l আসল সংস্কার হলো সতোগুণী সংস্কার l আত্মা যখন অব্যক্ত থেকে ব্যক্ত রূপে এই সংসার ক্ষেত্রে আসে, অর্থাৎ পরমধাম থেকে প্রথমবার সাকারী দুনিয়ায় আসে, তখন সেই সময় তার সতোগুণী সংস্কার থাকে, যা হলো আত্মার সাত গুণ ( জ্ঞান, প্রেম, পবিত্রতা, সুখ, শান্তি, আনন্দ আর শক্তি ) l সেইসময় আত্মা সাত গুণে ভরপুর অর্থাৎ আত্মার ব্যাটরি সম্পূর্ণ চার্জ থাকে l এই হলো আত্মার প্রকৃত সংস্কার l কিন্তু এই সংসারে আসার পর আত্মা ধীরে ধীরে তার বাস্তবিকতা থেকে দূরে যেতে থাকে, আর এই সংসারের নানা বিষয়ের বশীভূত হতে শুরু করে l সাত গুণে ভরপুর যে সংস্কার তাও ধীরে ধীরে লুপ্ত হতে থাকে আর এই দুনিয়ার কু পরিবেশের আধারে তার সংস্কার প্রভাবিত শুরু করে l আত্মার কর্ম তখন বিশেষ করে অজ্ঞানতা এবং অহংকারের আধারেই হতে থাকে l আর এই কারণেই আত্মার ভিতরে এই ধরনের সংস্কার বিকশিত হতে থাকে l
🔵 দ্বিতীয় প্রকারের সংস্কার হলো পুনর্জন্মের সংস্কার l বিভিন্ন আত্মা বিভিন্ন পরিবার বা পরিবেশ থেকে আসার কারণে সেখানকার সংস্কারও তাদের মধ্যে এসে যায়, এবং সেই সংস্কারের প্রভাব তাদের কর্মে প্রতিফলিত হয় l অনেক সময় দেখা যায়, কোনো তিন বছরের বাচ্চা অথচ কম্প্যুটার চালাতে জানে বা কোনো পাঁচ বছরের বাচ্চা অথচ শাস্ত্রের শ্লোক বলতে জানে, তখন মানুষ বলে, পূর্ব জন্মের সংস্কার উদয় হয়েছে l এ কি কেবল তাদের মধ্যেই উদয় হয়েছে, অন্য কারোর মধ্যে নেই ? সংস্কার সকলের মধ্যেই থাকে কিন্তু ইনটেনসিটিতে তফাত হয় l কারোর কারোর মধ্যে তীব্র ইনটেনসিটিতে তা প্রকট হয় l যার প্রভাব স্পষ্ট রূপে দেখা যায় l আবার কারোর মধ্যে স্লো ইনটেনসিটিতে তা প্রকট হয় l তখন তা দেখা যায় না, কিন্তু মাঝে মাঝে বর্তমানের কর্মে সেই সংস্কারের প্রভাব অবশ্যই এসে যায় l কখনো মানুষ নিজেই বুঝতে পারে না যে আমি এমন কেন করছি ?
👉 কেমনভাবে পূর্বজন্মের সংস্কার মাঝে মাঝে জীবনে প্রবেশ করে তা এক আসল কাহিনীর মাধ্যমে বর্ণনা করব l ক্রমশ: ...........
রাম নবমীর আধ্যাত্মিক রহস্য ?
🌻🍂 রাম নবমীর আধ্যাত্মিক রহস্য 🏹
☀ রাম নবমী পর্ব হিন্দু ধর্মে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, যা কিনা চৈত্র মাসের নবমী তিথিতে পালন করা হয় l কথিত আছে যে ত্রেতা যুগে এই দিন অযোধ্যার রাজা দশরথের ঘরে, তার প্রথম সন্তান এবং সেই রাজ্যের ভাবী রাজা শ্রী রামচন্দ্রের জন্ম হয়েছিলো l
☀ পরমাত্মা শিব স্বয়ং পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে এই রহস্যের উদঘাটন করে বলেছেন যে,এই সৃষ্টিচক্র ৫০০০ বছরের, যাতে চারটি যুগ আছে -- সত্যযুগ, ত্রেতাযুগ, দ্বাপরযুগ এবং কলিযুগ l এই চার যুগের প্রতিটি যুগের সময় ১২৫০ বছর করে l সত্যযুগ এবং ত্রেতাযুগে এই ভারতে স্বর্গরাজ্য ছিলো, যার স্থাপন স্বয়ং নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মা শিববাবা প্রজাপিতা ব্রহ্মার মাধ্যমে এই কলিযুগের ছোটো যুগ সঙ্গমযুগে ব্রাহ্মণ ধর্ম স্থাপনের মাধ্যমে করেছিলেন l ব্রহ্মার মাধ্যমে তিনিই গীতা জ্ঞান দিয়েছিলেন, যার দ্বারা ব্রাহ্মণদের উন্নতি হয়েছিলো l এর মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল নরককে স্বর্গে পরিণত করা অথবা মানুষকে নর থেকে নারায়ণ বা নারী থেকে লক্ষ্মীতে পরিণত করা l এই রাজযোগের জ্ঞানের দ্বারাই বিশ্বে সত্য ধর্মের স্থাপনা হয়েছিলো, যা আবার এখন হতে চলেছে l সত্যযুগ আর ত্রেতাযুগে ভারত স্বর্গ ছিলো, সেইসময় সূর্যবংশী এবং চন্দ্রবংশী রাজত্ব ছিলো আর লক্ষ্মী - নারায়ণ এবং রাম - সীতার সাম্রাজ্য ছিলো l সত্যযুগে আট জন্ম আর ত্রেতাযুগে বারো জন্ম ছিলো l এইপ্রকারে লক্ষ্মী - নারায়ণের আটটি প্রজন্ম চলেছিল, তারপর রামের জন্ম হয়েছিলো l যেহেতু রামের জন্ম নারায়নের আট জন্মের পরে হয়েছিলো সেই কারণে রামের জন্মদিনকে রাম নবমী বলা হয় l
🏹 এছাড়া শ্রীরামের হাতে ধনুক আর তীর দেখানোর অর্থ হলো যেহেতু চন্দ্রবংশী রাজ্যে ১৪ কলা ছিলো তাই এই রাজত্ব সূর্যবংশী শ্রীলক্ষ্মী - নারায়ণের সমান গুণ বা কলায় সম্পন্ন ছিলো না l এই কারণেই স্বয়ংবরের পূর্বে শ্রীলক্ষ্মী - শ্রীনারায়ণ যাঁরা রাধা - কৃষ্ণ ছিলেন, তাঁদের যে মহিমা ছিলো সেই একই মহিমা রাম - সীতার ছিলো না l তাই শ্রীকৃষ্ণকে দোলায় দোলানো হয় কিন্তু রামকে তা করা হয় না l বর্তমান সময়ে পরমপিতা পরমাত্মা শিববাবা মানুষ থেকে দেবতায় রূপান্তরিত করানোর জন্য সহজ রাজযোগের শিক্ষা দিচ্ছেন, এই গায়নও আছে যে মানুষ থেকে দেবতা বানানো কোনো মুশকিল কাজ নয় l তাই এই ঈশ্বরীয় পড়ার একমাত্র লক্ষ্য হলো ঈশ্বরের স্মরণ বা জ্ঞানের দ্বারা শ্রীলক্ষ্মী বা শ্রীনারায়ণের মতো নিজেকে তৈরী করা, যার মহিমায় গাওয়া হয় -- সর্বগুণ সম্পন্ন, ১৬ কলা সম্পূর্ণ, সম্পূর্ণ নির্বিকারী, মর্যাদা পুরুষোত্তম l যা একমাত্র পরমপিতা পরমাত্মা শিবের শ্রীমতের সম্পূর্ণ পালনের দ্বারাই সম্ভব l কিন্তু তার আগে রামের মতো হতে হবে, অর্থাত্ স্বর্ণ যুগের আগে নিজেকে রৌপ্যযুগের মতো বানাতে হবে, যার চিহ্ন হিসেবে পরমপিতা পরমাত্মা শিববাবা বলেছেন যে সমস্ত কর্মেন্দ্রিয়ের চঞ্চলতা সমাপ্ত হয়ে যাবে l এই পুরুষার্থ সূর্যবংশী সাম্রাজ্যে উচ্চ পদ পাবার জন্য যা কিনা ঈশ্বরীয় জ্ঞান, যোগ ( স্মরণের যাত্রা ), দৈবী গুণের ধারণা আর ঈশ্বরীয় সেবার দ্বারাই সম্ভব, এই ত্রেতা
যুগের রাম রাজ্যের কল্পনা গান্ধীজীও করেছিলেন, তাই আসুন, আমরা সকলে সেই রাম রাজ্য আর তার থেকেও শ্রেষ্ঠ লক্ষ্মী - নারায়ণের রাজ্যে যাবার পুরুষার্থ করি l আত্মার যে রাম তাঁকে আমরা স্মরণ করি, বাবার জ্ঞানকে ধারণ করে, শ্রীলক্ষ্মী - শ্রীনারায়ণ আর শ্রীরাম - শ্রীসীতার সেই স্বর্গরাজ্যের স্থাপনার কাজে পরমপিতা পরমাত্মা শিববাবার সহযোগী হই l আপনাদের সকলকে শ্রীরাম নবমীর আন্তরিক শুভ কামনা জানাই l
🙏 ওম্ শান্তি 🙏🌹🌹
#রাম নবমীর ব্যাখ্যা
রাম, সীতা, হনুমান এবং রাবণ কে ?- আধ্যাত্মিক রহস্য কি?
প্রশ্ন :- *রাম, সীতা, হনুমান এবং রাবণ কে ?*
*এর আধ্যাত্মিক রহস্য কি ?*
১ ) *রাম* :- বাস্তবে রাম হলেন নিরাকার শিব যিনি সঙ্গম যুগে এই ধরায় অবতরিত হয়ে নিজের হারিয়ে যাওয়া সীতাকে ( সত্যযুগী আত্মা ) রাবণের ( বিকারের ) শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে এসেছেন l
*সীতা* :- আত্মারা, যাদের প্রকৃত স্বরূপ পবিত্রতা, কিন্তু রাবণের শৃঙ্খলে ফেঁসে যাওয়ার কারণে এখন দুঃখী আর অপবিত্র হয়ে গেছে l
*রাবণ* :- পতিত এবং বিকার যুক্ত চিন্তা বা ধারণাই হলো রাবণ, যাতে এখন সমস্ত আত্মাই আক্রান্ত l ফলে আত্মিক গুণ হারিয়ে তারা নিজেদের ভুলে গেছে l চেতনায় বিকার জাগ্রত হওয়ার কারণে তাদের বুদ্ধি রাবণ তুল্য অর্থাৎ পাথর বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে গেছে l পাঁচ মুখ্য বিকার পুরুষের আর পাঁচ মুখ্য বিকার স্ত্রীর ---- এই কারণে রাবণের দশ মাথা দেখানো হয় l
*হনুমান* :-- -বাস্তবে সেই প্রথম আত্মা (ব্রহ্মা বাবা ), যিনি এই ধরায় অবতরিত পরমাত্মাকে প্রথম চিনতে পেরেছিলেন l তারসঙ্গে আরো অনেক আত্মা যারাও পরমাত্মা ( রাম ) এবং তাঁর কার্যকে চিনতে এবং জানতে পেরে অন্য আত্মাদের ( সীতা ) কাছে সেই সন্দেশ পৌঁছে দিয়েছিলেন এবং তাদেরও উদ্ধারের নিমিত্ত হয়েছিলেন l
*বানর সেনা* :- বাইরে থেকে সাধারণ মনে হওয়া সেইসব মনুষ্য আত্মা, যারা ঈশ্বরকে ( রাম ) চিনে, নিজেদের সংস্কারের পরিবর্তনের দ্বারা, পুরানো দুনিয়া অর্থাৎ রাবণ রাজ্যকে (পতিত চিন্তায় আধারিত যে দুনিয়া ) সমাপ্ত করাতে ঈশ্বরের ( রামের ) সাথ দিয়েছিলেন l সংসারের সেই তেত্রিশ কোটি আত্মাই হলো *বানর সেনা l*
*লঙ্কা* :- পুরানো পতিত দুনিয়া, যেখানে প্রতিটি কাজ দেহভাবের ( body consciousness ) সঙ্গে করা হয় l এই হলো রাবণ নগরী *লঙ্কা l*
💥💥💥💥💥💥💥💥💥
পরিবর্তনের রহস্য কি ?
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮
✨❣✨আজকের প্রেরণা ✨❣✨
*পরিবর্তনের রহস্য হলো -- নিজের শক্তি (উর্জা/এনার্জি) নতুন নির্মাণে লাগানো, নাকি পুরানোর সঙ্গে সংঘর্ষ করে নষ্ট করা l*
✨✨ *আজ থেকে আমরা যেন নতুন নির্মাণের দ্বারা পুরানোকে পরিবর্তন করতে পারি -----*
🌹🌹মধুবন 🌹🌹
☀❣☀❣☀❣☀❣☀❣
শিবলিঙ্গ এর উপর অঙ্কিত তিন রেখা এবং বেলপাতার রহস্য ------
💐💐💐💐💐💐💐💐💐
শিবলিঙ্গে সবসময় তিনটি রেখা অঙ্কিত থাকে এবং তিনপাতা যুক্ত বেলপাতা অর্পণ করা হয় | বাস্তবে পরমাত্মা শিব ত্রিমূর্তি অর্থাৎ ব্রম্মা --- বিষ্ণু --- শংকরের রচয়িতা | তিনি করণকরায়নহার অর্থাৎ করিয়ে দেন | ব্রম্মার দ্বারা সত্যযুগী দৈবী সৃষ্টি স্থাপন করান , শংকরের দ্বারা আসুরী সৃষ্টি বিনাশ করান এবং বিষ্ণুর দ্বারা সত্যযুগী দৈবী সৃষ্টি পালন করান | পরমাত্মা এই সৃষ্টিতে যখন অবতরণ করেন তখন এই দেবতার কার্য সূক্ষলোকে আরম্ভ হয় | অতএব শিবজয়ন্তী মানে ব্রম্মা --- বিষ্ণু -- শংকর জয়ন্তী তথা গীতা - জয়ন্তী ও বটে কারণ ভগবান শিব অবতরণ করে গীতাজ্ঞানও শোনাতে শুরু করেন |
সঙ্গম যুগ কি - সৃষ্টিচক্র আর সঙ্গম যুগ
****************************
*সৃষ্টিচক্র আর সঙ্গমযুগের যথার্থ জ্ঞান যদি মানুষের কাছে থাকতো, তাহলে আজকের দুনিয়া এইভাবে ভ্রষ্টাচার আর পাপে ডুবে থাকতো না l দুনিয়া যখন অজ্ঞানের অন্ধকারে ডুবে থাকে পাপ এবং অন্যায় - অত্যাচার যখন দুনিয়াকে আবৃত করে রাখে তখনই এই দুনিয়াকে শুধু কলিযুগ নয়, ঘোর কলিযুগ বলা হয় l*
🌍 *তাহলে আসুন, আমরা জেনে নিই, আমাদের সৃষ্টিচক্র কি করে ------*
🌟 *এই সৃষ্টি যেভাবে ঘুরতে থাকে, তাকেই বলা হয় সৃষ্টিচক্র l দুনিয়াতে প্রত্যেকটি ঘটনারই পুনরাবৃত্তি চলছে l এই সৃষ্টির সম্পূর্ণ সিস্টেম চক্র রূপে ঘুরে চলেছে l যেমন ----রাত - দিন, জন্ম - মরণ, ঋতুচক্র, সপ্তাহ, মাস, সাল ইত্যাদি l তেমনই যুগের প্রত্যেকটি সিস্টেমেরই একটা চক্র থাকে l কল্পেরও প্রত্যেকটি সিস্টেমের একটা চক্র থাকে, যা কেউ দেখতে পায় না কেননা কল্পের আয়ু এতোই বড় যে, কোনো মানুষের পক্ষে তা দেখা সম্ভব নয় l তাই এই কল্পের সম্পূর্ণ জ্ঞান একমাত্র পরমপিতা পরমাত্মার কাছেই আছে, যিনি জন্ম - মরণ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক l এক কল্প অর্থাৎ চার যুগ l যথা -----সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর এবং কলি l এই চার যুগ মিলে হয় এক কল্প l এক একটি যুগের আয়ু হলো ১২৫০ বছর l তাহলে ১২৫০ x ৪ = ৫০০০ বছরের এক কল্প, অর্থাৎ সৃষ্টিচক্রের একবার চক্র সম্পূর্ণ করার পূর্ণ সময় l*
*এবার আমরা জানবো এই চার যুগ কেমন ----*
👸🤴 *সত্যযুগ :-- রাধা - কৃষ্ণ, যারা বড় হয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর লক্ষ্মী - নারায়ণ রূপে পরিচিত হন, এ হলো তাঁদের যুগ l এই কারণেই সত্যনারায়ণের কথা প্রচলিত, যেহেতু নারায়ণ সত্যযুগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন lসেইসময় এই ধরিত্রী ছিলো স্বর্গরাজ্য l চারিদিকে ছিলো স্বর্ণময় প্রকাশ, একেই স্বর্ণযুগ বলা হয় l যেই যুগকে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বিভিন্ন নামে জানে l যেমন ---- প্যারাডাইস, জন্নত, বেহস্ত, আল্লাহ কা বাগিচা, বৈকুন্ঠ ইত্যাদি l*
🤴👸🏹 *ত্রেতা :--- ত্রেতায় ছিলেন রাম - সীতা l একে Silver world বা রৌপ্য যুগ বলা হয় l*
👨👱♀ *দ্বাপর যুগ :-- দ্বাপর থেকে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগুরুদের আগমন শুরু হয় যা কলিযুগ পর্যন্ত জারি থাকে l কর্ম অনুসারে সর্বপ্রথম এসেছিলেন ইব্রাহিম - ইসলাম, গৌতম বুদ্ধ - বৌদ্ধ, ক্রাইস্ট - ক্রিশ্চানিটি, মহাবীর - জৈন এবং গুরু নানক - শিখ l*
👺 *কলিযুগ :-- এই যুগ হলো কলহ - ক্লেশের যুগ তার সঙ্গে বিজ্ঞানেরও চরম সীমায় পৌঁছানোর যুগ l এই যুগে বিজ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে পাপেরও অতিমাত্রায় বৃদ্ধি হয় l বিজ্ঞানের সমৃদ্ধি এমন পর্যন্ত হয় যে, মানুষ এই সময় বিনাশের সামগ্রীও তৈরী করে ফেলে l চারিদিকে মিথ্যা, ধোকা, বেইমানি, কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, ভয়, অসুরক্ষা, অকালমৃত্যু, পাপাচার, ভ্রষ্টাচার, অত্যাচার সব অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পায় তখন এক নবযুগ নির্মাণ হয় l এই কথা কোনো ধর্মে বা শাস্ত্রে উল্লেখ করা নেই l এই যুগকেই বলা হয় -----💥সঙ্গম যুগ 💥l*
*যখন সত্যযুগ থাকে, তখন ত্রেতা থাকে না, যখন ত্রেতা থাকে তখন দ্বাপর থাকে না, যখন দ্বাপর যুগ থাকে তখন কলিযুগ থাকে না কিন্তু কলিযুগের অন্তে যখন ঘোর কলিযুগ আসে তখন দুই যুগ সাথে সাথে চলে ----কলিযুগ আর সঙ্গমযুগ কিন্তু এ কেবল ১০০ বছরের জন্য অর্থাৎ ১২৫০ বছরের কলিযুগের শেষ ১০০ বছরকে সঙ্গমযুগ বলা হয় l যারমধ্যে ৮৩ বছর পার হয়ে গেছে l*
*সঙ্গম যুগ কি ?*
*সঙ্গম যুগের গুরুত্ব চার যুগ অপেক্ষা অধিক l একে হীরেতুল্য যুগ বলা হয় l এই সময় খারাপ অতিমাত্রায় পৌঁছায় এবং তখনই গীতার নিরাকার ভগবান পরমপিতা শিব অবতরিত হন, তিনি ধর্মের অতি গ্লানিকে গীতাজ্ঞান দ্বারা বিনাশ করে সত্য ধর্মের পুনঃ স্থাপনা করেন l যার ফল স্বরূপ কলিযুগের অন্ত হয় এবং সত্যযুগের স্থাপন হয় l তাই কলিযুগ আর সত্যযুগের মধ্যবর্তী এই ১০০ বছরের সময়কে সঙ্গম যুগ বলা হয় l এই সঙ্গম যুগের অন্তের পরেনতুন সৃষ্টি এবং নব বিশ্বের নির্মাণ হয় ফলে এই জ্ঞান নতুন কল্পে প্রায় লোপ হয়ে যায় l আর দ্বাপর যুগের শুরুতে যে গীতা লেখা হয় তাতে ভগবান শিবের জায়গায় রাজকুমার শ্রীকৃষ্ণের নাম দিয়ে দেওয়া হয় l*
💎 *এখন সেই মূল্যবান থেকেও অতি মূল্যবান সময় চলছে l এই সময় হলো হীরেতুল্য, যখন ভগবান স্বয়ং এসে গীতাজ্ঞান দ্বারা রাজযোগের মাধ্যমে আমাদের পবিত্র বানাচ্ছেন, নতুন বিশ্ব, নতুন সতোপ্রধান সত্যযুগের দেবী - দেবতা তৈরী করছেন আমাদের l ভগবান আসেনই বিশ্ব পরিবর্তনের কারণে, পতিত মানুষদের পবিত্র বানাবার জন্য l এ হলো ক্রান্তিকারী পরিবর্তনের যুগ l*
🙏 *এর বিস্তারিত তথ্যের জন্য নতুন স্বর্ণযুগে নিজের ভাগ্য বানানোর জন্য, প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো শাখায় ৭ দিনের কোর্স করা অত্যন্ত জরুরী l*
বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন- লিঙ্ক
🤴 *এখন নয় তো কখনোই নয় l পরে বলো না, ভগবান পৃথিবীতে এলো আর আমরা জানতে পারলাম না l*🤴
🌹🌹ওম শান্তি 🌹🌹
গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য 🌻নয়,দশ,এগারো এবং বারো অধ্যায় ☀☀☀☀
গীতা হলো সর্ব ধর্মের সার
*গীতা হলো সর্ব ধর্মের সার l আজকের দুনিয়ায় নানা ব্যস্ততার কারণে মানুষের হাতে বেদ - পুরাণ - উপনিষদ ইত্যাদি শাস্ত্র পড়ার সময় নেই l গীতার জ্ঞান স্বয়ং ভগবানের শ্রীমুখের দ্বারা আমাদের আত্মাদের কাছে পৌঁছেছে l সংসারের যত ধর্ম পুস্তক আছে তা সেই সব ধর্মের মানুষদের জীবনের আচরণ শেখায় l শ্রীমদ্ভগবদগীতাতে কোথাও একবারও "হিন্দু" শব্দ উচ্চারণ করা হয় নি l এই ধর্মশাস্ত্র সমগ্র মানব জাতির কল্যাণের নিমিত্তে l এ এক মানবতার শাস্ত্র l আজকের যুগে এই গীতা জ্ঞান মানুষের জীবন যাপনের কলা শেখায় l সম্ভবত এই কারণেই সমস্ত সংসারের মানুষ শ্রীমদ্ভগবদগীতাকে বোঝার চেষ্টা করে আসছে l আশ্চর্যের কথা যে, আজ সংসারে যত ভাষায় গীতার অনুবাদ হয়েছে, তেমন অন্য কোনো পুস্তকের হয় নি l এ এক এমন পুস্তক যা মানুষ বুঝতে চেয়েছে আর এই পুস্তক থেকে নিজেদের জীবনের নানা সমস্যার সমাধান প্রাপ্ত করতে চেয়েছে কারণ গীতায় আছে অনেক গুহ্য রহস্যের কথা যা অতি সূক্ষ্ম ভাবে অনুধাবনের প্রয়োজন l এই গুহ্য রহস্যকে যখন আমরা আধ্যাত্মিকতার আধারে বোঝার প্রয়াস করি তখন প্রতিটি বিষয় যথার্থ রূপে বোঝার শক্তি এসে যায় l তাই এই কথা মানা হয় যে বিশুদ্ধ আধ্যাত্মিক জ্ঞানের দৃষ্টিতে শ্রীমদ্ভগবদগীতা অতুলনীয় l এর বিশেষত্ব হলো, এতে বর্ণিত জ্ঞান সমগ্র মানব জাতির জন্য l এই জ্ঞান কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের মান্যতার আধারে হয় নি l গীতা শাস্ত্রে সর্ব ধর্মের মর্যাদাকে সুরক্ষিত রেখে ঈশ্বরীয় আধ্যাত্মিক জ্ঞানকে সার রূপে উদ্ধৃত করা হয়েছে l*
🕉🕉🕉🕉🕉🕉🕉🕉🕉🕉
গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য - ১০৩ - ☀ নয় ,দশ,এগারো ও বারো অধ্যায় ☀
No - ১০৩
🌷🌷 সমর্পন-ভাব 🌷🌷
☀ নয় ,দশ,এগারো ও বারো অধ্যায় ☀
🔆🔆 ভগবানের লোকসংহারকারী রূপ ,আসলে ওনার কল্যাণকারী রূপই। তাই তিনি ব্রহ্মা,বিষ্ণু এবং মহেশ্বরের রচনা করেন।পরমাত্মা ব্রহ্মার দ্বারা নতুন সৃষ্টি স্থাপনার কর্তব্য পালন করেন, বিষ্ণু দ্বারা নতুন সত্যযুগের সৃষ্টি আর পালনের কর্তব্য এবং কলিযুগের বিকৃত সৃষ্টির মহাবিনাশের কার্য মহেশ্বেরের দ্বারা সম্পন্ন করান। পৃথিবীতে দেখা যাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে মৃত্যুর মিছিল আরম্ভ হয়ে গেছে। সব আত্মাদেরই উপরে যেতে হবে আর সময়ও এখন পরিবর্তন হচ্ছে। এখন সত্যযুগ আসার সময় হয়ে গেছে। তাই বিশ্বের পরিবর্তনের গতিও তীব্র হয়ে গেছে l লোকসংহারকারীর অর্থ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ভগবানের লোককল্যাণকারীর মনোভাব। তাই ভগবান এই কথাটি স্পষ্ট করে দেন যে, পুনর্নিমানের এই কার্য কেবল মাত্র কালের দ্বারাই সম্ভব অর্থাৎ কেবলমাত্র কালই এই পরিবর্তন করতে সামর্থ্যবান।
সেইজন্য সর্বকালের মানুষমাত্রেরই প্রতিনিধি অর্জুনকে এই উপদেশ দেওয়া হয় যে, তিনি যেন নির্ভয়ে নিজের জীবনের কর্তব্য পালন করেন । ভগবান, অর্জুনরূপী মনুষ্যকেও উপদেশ দেন , আমরা যেন নির্ভয়ে আমাদের জীবনের কর্তব্য পালন করি। পুনরায় উত্থানের জন্য সহযোগ করে বাস্তবে অর্জুন সফল কর্মে সহযোগিতা করছেন, তাই আমাদেরও সফল কার্যকেই সহযোগ দেওয়া উচিত। এইরকম অর্জুন হওয়ার প্রেরণাই ভগবান আমাদের দিয়েছেন।পুনরায় অর্জুন জিজ্ঞেস করেন যে, সকল সিদ্ধ সন্ত আপনাকে কেন প্রণাম করবেন না, কেননা আপনি তো সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মারও আদি কর্তা ? তাই বলা হয়েছে ,ব্রহ্মা,বিষ্ণু ও মহেশ্বরেরও আদি সৃষ্টি কর্তা পারামাত্মাই। অনন্ত-স্বরূপ পরমাত্মা দেবতাদেরও ঈশ্বর। পরমাত্মা এক ও অদ্বিতীয়। যিনি সব দেব -দেবীর ঈশ্বর। সম্পূর্ণ বিশ্বপ্রকৃতি ও দেবতারা পরমাত্মার দ্বারা সামর্থ্যবান হয়।
🔆🔆🔆🔆🔆🔆🔆🔆🔆🔆
গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য পঞ্চম এবং ষষ্ঠ অধ্যায়
. পরমাত্ম - অবতরণ এবং কর্মযোগ
. পঞ্চম এবং ষষ্ঠ অধ্যায়
🔆 গীতার ষষ্ঠ অধ্যায়ে ভগবান ধ্যান যোগের বিশেষত্বকে বলতে গিয়ে, যোগ আর তার অভ্যাস আর তার সঠিক বিধিকে স্পষ্ট করেছেন l মনকে কোন্ কোন্ কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়, ধ্যানের দ্বারা পরমাত্মার সঙ্গে মন কিভাবে একাগ্র করবে ইত্যাদি ....ইত্যাদি l হে অর্জুন ! কর্ম করাকালীন কোনো প্রকারের ফলের আশা না রেখে যিনি কর্ম করেন তথা ইন্দ্রিয়জিত হয়ে সমস্ত প্রকার সুখের ভৌতিক পদার্থের ইচ্ছাযুক্ত সংকল্পের ত্যাগ যিনি করতে পারেন, তিনিই প্রকৃত যোগী বা সন্ন্যাসী l যার মন বশীভূত, যিনি প্রসন্নচিত্ত হয়ে স্বয়ং কোনো না কোনো উপযোগী কর্ম করেন, অর্থাৎ সময় কোনো শ্রেষ্ঠ কাজে লাগান তিনিই যোগারূঢ় অর্থাৎ কর্মযোগী l এমন কর্মযোগীই আমাদের হতে হবে l সমস্ত মানুষের আত্মোন্নতি করতে হবে, সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, আমি নিজের আত্মোন্নতিই বা কিভাবে করব l আত্মার অধোগতি কখনোই হতে দেওয়া উচিত নয়, কারণ জীবাত্মা নিজেই নিজের বন্ধু বা শত্রু l
🔆 অর্জুন এরপর ভগবানকে প্রশ্ন করেন, কখন জীবাত্মা নিজেই নিজের ব্ন্ধু বা নিজেই নিজের শত্রুতে পরিণত হয়!
🔆 ভগবান খুব ভালোভাবে এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন যে, যখন মন সমেত সমস্ত ইন্দ্রিয়কে জীবাত্মা জয় করতে পারে, তখন সেই জীবাত্মা নিজেই নিজের ব্ন্ধু l অর্থাৎ সেই বিজিত মন জীবাত্মার ব্ন্ধু l আবার যখন এই মন সহিত সমস্ত ইন্দ্রিয় পরবশ অর্থাৎ অন্যের অধীন, কোনো না কোনো খারাপ কাজের অধীন, কখনো কখনো এই মন ঈর্ষা, দ্বেষের অধীন হয়ে পরবশ হয়, তখন এই মন হলো আত্মার শত্রু l যিনি মনকে জয় করেছেন, এমন পুরুষ মান, অপমান, সুখ, দুঃখে, উষ্ণ বা শীতল যে কোনো পরিস্থিতিতেই মনকে শান্ত রেখে পরমাত্মার স্মৃতিতে অন্তর্লীন হতে পারে l সেই যোগী নিজের আধ্যাত্মিক জ্ঞান আর আত্ম - অনুভূতির দ্বারা পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট থাকেন l এমন জিতেন্দ্রিয় ব্যক্তির দৃষ্টিতে মাটি, পাথর এবং কাঞ্চন সমতুল্য l তিনি ভিন্ন ভিন্ন স্বভাবের ব্যক্তির প্রতিও সম - ব্যবহার করেন l সংযমযুক্ত অপরিগ্রহী যোগী সর্বদা একান্তে থেকে নিজের মনকে বশীভূত করে, নিরন্তর পরমাত্মার স্মরণে বুদ্ধিকে একাগ্র করতে পারেন l
🔆 এরপর ভগবান ধ্যানে যথার্থভাবে বসার বিধি বলেছেন l শান্ত অন্তঃকরণ, ভয়রহিত, ব্রহ্মচর্য ব্রতে স্থিত যোগীকে পবিত্র একান্ত স্থানে আসন বিছিয়ে, দৃঢ়তাপূর্বক মেরুদন্ডকে সোজা রেখে মন, ইন্দ্রিয় তথা কর্মকে সংযম করে নিরাকার পরমাত্মার সঙ্গে মন, বুদ্ধি এবং দৃষ্টিকে একাগ্র করে হৃদয়ে শুভ ভাবনা রেখে যোগাভ্যাস করতে হবে l এই যোগ যারা শুদ্ধ আহার - বিহার বা কর্ম করেন, বা যারা সন্তুলিত শয়ন, জাগরণ করেন তাদেরই পূর্ণ হওয়া সম্ভব l এই হলো যোগ বা ধ্যানের সঠিক বিধি l ওম্ শান্তি!
গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য - 104
The Great Geeta
No --- 104
জীবনকে উপভোগ করার সম্পূৰ্ণ বিধি
ভগবান এখানে বলেছেন , জীবন উপভোগ করার সম্পূৰ্ণ নিয়ম কি ? এই জীবন উপভোগ করার জন্য কোন কোন জিনিষ মনুষ্য জীবনে কোন প্রকারে হওয়া দরকার ? ভগবান এটাই স্পষ্ট করছেন , সতো, রজো , তমো প্রকৃতির তিন গুণ আর তার থেকে মনুষ্য আত্মারা কি ভাবে প্রভাবিত হয় ! যে প্রকৃতির প্রভাব বিশেষ হয় , তেমন তার আন্তরিক প্রকৃতি হয় আর সেই কর্মে ভগবান তিন প্রকারের যজ্ঞ বলেছেন আর তার বিশ্লেষণ করেছেন ! তিন প্রকারের তপস্যা আর তিন প্রকারের ভোজন বলেছেন !
এই অধ্যায়ে আর পরবর্তী জীবনে যে বিশিষ্ট কথা আছে , তিন প্রকারের বুদ্ধি , তিন প্রকারের ত্যাগ , তিন প্রকারের সুখ , তিন প্রকারের ধারণা শক্তি , তিন প্রকারের কর্ম অর্থাত কিভাবে আমাদের জীবন অতিবাহিত করতে হবে , এইসব আমাদের নিজেদের নিশ্চয় করতে হবে ! যদি আমাদের সাত্বিক জীবন কাটাতে হয় , তো আমাদের বুদ্ধি কেমন হওয়া দরকার? আমাদের ধারণা শক্তি কেমন হওয়া দরকার ? আমাদের কর্ম কিরকম হওয়া দরকার ? আর তার থেকে related সুখ কিরকম হওয়া উচিত ? এইভাবে তিন তিন কথাকে ভালোভাবে স্পষ্ট করেছেন!
সারাংশে জীবন অতিবাহিত করার বিধি বলেছেন ! সন্ন্যাসের পরম সিদ্ধি কি ? সেটাও স্পষ্ট করেছেন ? সন্ন্যাসের মানে এই নয় যে সব কিছু ছেড়ে দিতে হবে , নিজের কর্তব্যকে ছাড়া , নিজের উত্তরদায়িত্বকে ছাড়া , এইসবকে সন্ন্যাস বলা হয় না |
সার -- মানুষদের ভিতরে থাকা আসুরী বৃত্তির সন্ন্যাস , এইসবের বিশেষ প্রেরণা দিয়েছেন ! এখানে ত্যাগের অর্থ আর মানবীয় চেতনা তথা কর্মে প্রকৃতির গুণের প্রভাব বোঝান ! এই অধ্যায়ে বর্ণিত সংকেত আমাদের আন্তরিক ব্যক্তিত্বের বোধ করায় , যে কিভাবে ব্যক্তিত্বকে আমাদের নিজের ভেতর থেকে নির্মান করতে হবে , আর সময় প্রতি সময় , আমরা এই সূচকের আধারে নিজের ব্যক্তিত্বের অবলোকন করি , যে এটা সাত্বিক , রাজসিক না তামসিক ! সেইসবের আধারে নিজেকে পরিবর্তন করুন !
ওম শান্তি !
গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য 097
📚গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য📚
✨ The Great Geeta✨
📝No.097📝
🌷 *সমর্পণ..... ভাব* 🌷
নবম, দশম, এগারো এবং বারো অধ্যায়
যতটা সম্ভব নিজেরা একে অপরের উন্নতির কথা চিন্তা করবো। এইজন্যই ভগবান বলেছেন, "যে আত্মা নিজেদের মধ্যে জ্ঞানের চর্চা করে ওই আত্মা প্রসন্নতার পাশাপাশি দিব্য আনন্দের অনুভব করে এবং সাথে সাথে কিভাবে পরমাত্মার সন্ধান পাবে সেই দিব্য জ্ঞান স্বয়ং তিনিই ( পরমাত্মা ) তাকে প্রদান করেন"। কেননা যতক্ষণ পর্যন্ত স্বয়ং পরমাত্মা নিজেই নিজের পরিচয় না দেন ততক্ষণ পর্যন্ত পরমাত্মাকে চেনার বা বোঝার ক্ষমতা কোনো মনুষ্য আত্মার নেই, কারণ এই শ্রেষ্ঠ দিব্য জ্ঞান পরমাত্মা ব্যতিত অন্য কোনো মনুষ্য আত্মার অজানা।
হঠাৎ যদি আপনি নতুন কোনো গ্রামে বা শহরে যান, তবে সেখানকার লোক আপনার কথাবার্তা, চালচলন থেকে কেবলমাত্র আন্দাজ করবে যে আপনি হয়তো অমুক জায়গা থেকে এসেছেন কিংবা আপনার মুখ দেখে আন্দাজ করবে হয়তো আপনার স্বভাব এমনটা হতে পারে, সুতরাং আন্দাজই করবে মাত্র। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত স্বয়ং আপনি নিজেই নিজের পরিচয় না দেবেন ততক্ষণ পর্যন্ত ওই এলাকার কেউই কখনো আপনার সত্য পরিচয় পাবে না। কেবল আপনি নিজেই আপনার সত্য পরিচয় অন্যদের দিতে পারেন।
ঠিক এইভাবে আজ অবধি ঈশ্বরের বিষয়ে আমরা নিজেরাই নিজেদের বুদ্ধি দিয়ে কেবল আন্দাজ করেছি মাত্র যে, ঈশ্বর হয়তো এমনটা হতে পারে কিংবা এইরকম হতে পারে, তাই আজ ঈশ্বরের বিষয় নিয়ে এত মত-মতান্তর আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে এবং ঈশ্বরের বিষয়ে সঠিক না জানার কারণে মনুষ্য দ্বারা ঈশ্বর তথা ধর্মের গ্লানি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।যখন ধর্মের অতি গ্লানি হয় তখন স্বয়ং ভগবান আবির্ভুত হয়ে দিব্য জ্ঞান প্রদান করেন, যে জ্ঞানের দ্বারা ঈশ্বরের বাস্তবিক পরিচয়, যথার্থ দিব্য স্বরূপের সন্ধান পাই।যার দ্বারা ঈশ্বরের সঠিক রূপকে স্মরণ করতে পারি। ভগবান বলেছেন, "যে আমার দিব্য স্বরূপকে স্মরণ করে তাঁর প্রতি আমার বিশেষ কৃপাদৃষ্টি বর্ষিত হয় এবং ঐ আত্মার ভিতরে জমে থাকা বিন্দুমাত্র অজ্ঞান অন্ধকারকে দূর করে দিই"।
এই অজ্ঞান অন্ধকারের কারণ কি? পাঁচ বিকার কাম ,ক্রোধ,রাগ, দ্বেষ, মোহ যার দ্বারা দুঃখ এবং দুঃখের হাত ধরে অন্ধকারে চলে যায়। এইজন্য ভগবান বলেছেন,"আমি জ্ঞানের দ্বারা দুঃখের সাথে সাথে অজ্ঞান অন্ধকারকে দূর করে আত্মার প্রকাশমান দীপক জ্বালিয়ে দিয়ে আত্মঅভিমানী স্তিতিতে স্তিত করাই"। অর্থাৎ আত্মার স্বরূপে স্তিত হওয়ার শ্রেষ্ট দিব্য জ্ঞান কেবল পরোমাত্মাই আমাদের দেন। এইবারে অর্জুনের কাছে পরমাত্মার দিব্য স্বরূপের রহস্য স্পষ্ট হয়ে গেল, *অর্জুন তখন ভগবানকে বললেন," প্রভু আপনি পরমধাম নিবাসী, পরম পবিত্র, পরম সত্য, অজন্মা, সর্বোচ্চ দিব্য জ্ঞান-শক্তিতে ভরপুর, আপনি সম্পূর্ণ, আপনার দিব্য জ্ঞান সম্পূর্ণ সত্য, আপনার এই শ্রেষ্ট জ্ঞান না দেবগন, না অসুরগণ বুঝতে পারবে, আপনি দেবতাদের অধিপতি, দেবতাদের দেবতা মহাদেব, ত্রিলোকিনাথ"।
গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য 052
গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য 094
📚গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য📚
✨The Great Geeta✨
📝No.094📝
💐 *সমর্পণ.....ভাব* 💐
🎗নবম,দশম,এগারো এবং বারো অধ্যায়🎗
💐ঈশ্বরকে সখা বানিয়ে দেখো কতখানি সুন্দর অনুভব হয়। ভক্তিমার্গে যিনি ঈশ্বরের সাথে যেমন সম্বন্ধ স্থাপন করেছেন, তিনি ঈশ্বরকে নিয়ে ঠিক তেমনই সুখ অনুভব করছেন(সুধামা, অর্জুনের মতো)। অর্জুন সারথি রূপে সম্বন্ধ স্থাপন করেছিলেন তাই ঈশ্বর ও অর্জুনের সারথি হয়ে সখার মতো সবসময় সঠিক নির্দেশ দিয়েছিলেন অর্থাৎ 'মিত্রসম্বন্ধী ভাব'। যদিও অর্জুন শিব পরমাত্মার সাধারণ রূপের সাথেই সম্বন্ধ স্থাপন করেছিলেন অর্থাৎ শ্রী কৃষ্ণ রূপের সাথে, কিন্তু এটাতো অবশ্যই মানতো যে ভগবান কৃষ্ণই তার সখা।
ভগবান বলেছেন, "অত্যন্ত দুরাচারী হয়েও যে অনন্য ভাবে নিশ্চয় বুদ্ধি ধারণ করে আমার (ঈশ্বরের) স্মরণে আসে, সেবা করে তার সাধু হওয়ার যোগ্যতা আছে, তার মনের ভিতর যতই দুরাচারী স্বভাব থাকুক না কেন। কিন্তু দুরাচারীর মনে কখনো ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা ভাব থাকে না, এইজন্য দয়ালু ভগবান বলেছেন, "যদিও সে দুরাচারী তবুও যদি নিশ্চয় বুদ্ধি নিয়ে অনন্য ভাবে আমার স্মরণে আসে, সেবা করে তো ওই দুরাচারীও সাধু হয়ে যায়। কারণ দুরাচারীর সামনে যখন ঈশ্বরের নাম নেওয়া হয় তখন তারা বলে,"আরে ভগবান বলে কেউ নেই"...ওরা তো শুধু এটাই জানে হয় মারো নয় মরো। ঈশ্বরকে কখনও ওরা শ্রদ্ধা সম্মান করে না কিন্তু তবুও ঈশ্বর তাদের প্রতি খুবই দয়ালু। শাস্ত্রে এইরকম অনেক কাহিনী রয়েছে,.....
💫এক ব্যাক্তি ঈশ্বরকে একদম মানতো না, তাই বুদ্ধি করে ওই ব্যক্তির স্ত্রী তাদের পুত্রের নাম নারায়ণ রাখে এই ভেবে যে অন্তত পুত্রকে ডাকার সময় তো নারায়ণের(ভগবানের) নাম নেবে।কিন্তু তবুও ওই ব্যক্তি খুব সামলে নিজের পুত্রের নাম তথা নারায়ণের নাম নিত। অন্তিম সময়ে প্রাণত্যাগ করার পূর্বমুহূর্তে ওই ব্যক্তি দেখতে পায় যে যমদূত তাকে নিতে এসেছে,ভয়ে ওই ব্যক্তি তখন নিজের পুত্রের নাম ধরে ডাকতে থাকে,"নারায়ণ আমাকে বাঁচাও যমদূত নিতে এসেছে"। দয়ালু ভগবান তখন স্বয়ং দৌড়ে আসে ওই ব্যক্তির কাছে কেননা সে ভগবান এর নাম নিয়েছে।
শাস্ত্রে এইরকম অনেক কাহিনী আছে যেগুলো আমাদের স্মৃতিমন্থন করায় যে ব্যাক্তি যতই দুরাচারী হোক না কেন ,তবুও ভগবান তাদের প্রতি কতো দয়া ভাব দেখিয়েছেন। যে ব্যাক্তি ঈশ্বরের স্মরণে কখনো আসে না কিন্তু কখনও কখনও সময় চক্র ওই ব্যাক্তিকে ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা ভাবকে মজবুত করে দেয়, সাধু হওয়ার যোগ্যতা লাভ করে, পরম শান্তি অনুভব করে...যেটা সে কখনোই ছিল না বা তার দ্বারা সম্ভব ছিল না। তাহলে ভেবে দেখুন ঈশ্বর যদি দুরাচারীকেও সদগতি দিতে পারে তবে ধর্মাত্মা, ব্রাহ্মণ, যোগী, রাজঋষিদের কি গতি দেবেন। সেটা কখনো কল্পনা করা যাবে না।
গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য 096
ON GODLY SERVICE🌻
📚গীতা জ্ঞানের আধ্যাত্মিক রহস্য📚
✨ The Great Geeta✨
📝No.096📝
🌷সমর্পণ..... ভাব🌷
নবম, দশম, এগারো এবং বারো অধ্যায়
এইভাবে ভগবান তাঁর প্রিয় মিত্র অর্জুনকে নিজের উৎপত্তির রহস্যযুক্ত শ্রেষ্টজ্ঞান দিতে দিতে বললেন, "কোনো দেবতা, মহর্ষিগণ আমার উৎপত্তির গূঢ় রহস্য জানে না"। তাহলে এটা ভাববার বিষয় যখন কোনো দেবতা, মহর্ষিগণ ঈশ্বর এর উৎপত্তি রহস্য জানেন না তবে সংসারের মনুষ্যগণ কিভাবে জানবে? এইজন্যই তিনি খুবই স্পষ্ট ভাবে বলেছেন, "আমার উৎপত্তির রহস্য যুক্ত শ্রেষ্ট জ্ঞান না কোনো দেবাত্মা, না কোনো মহর্ষিগণ জানবে কেবল মোহ মুক্ত, পাপমুক্ত, জ্ঞান-ধ্যান যুক্ত আত্মারই যথার্থ অজন্মা, অনাদি স্বরূপের জ্ঞান প্রাপ্ত হয়"।
পুনরায় তিনি নিজের অব্যক্ত স্বরূপের স্পষ্ট বিবরণ করেছেন, "আমিই অজন্মা, অনাদি, মনুষ্য আত্মার সমস্ত দিব্য গুণ প্রদান করেছি"। সুতরাং প্রত্যেক মনুষ্য আত্মার ভিতর কিছু না কিছু গুণ অবশ্যই আছে, এইজন্য দুনিয়াতে একটা কথার প্রচলন আছে "কোনো ব্যক্তির ভিতর যদি নিরানব্বই শতাংশও যদি অবগুণ থাকে তবুও এক শতাংশ ভালো গুণ অবশ্যই থাকবে"। মনুষ্য আত্মার ওই দু-এক শতাংশ ভালো গুণ, দিব্য গুণ ঈশ্বর দ্বারাই প্রাপ্ত হয়েছে। মনুষ্য জীবনকে অর্থপূর্ণ বানানোর জন্য ঈশ্বর কোনো না কোনো বিশেষত্ব, গুণ অবশ্যই গিফট হিসাবে দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন ঈশ্বর তো অজন্মা, অব্যক্ত তাহলে তিনি কিভাবে এই দিব্য গুণ, বিশেষত্ব মনুষ্য আত্মাকে প্রদান করেন ওগুলো তো কোনো ভৌতিক বা স্থূল সামগ্রী নয় যে উঠিয়ে দেবেন....
ঈশ্বর সংকল্পের দ্বারা ওঁনার ভিতরের দিব্যশক্তিকে গিফট রূপে মনুষ্য আত্মাকে প্রদান করেন। যে পুরুষ জ্ঞান-যোগের দ্বারা ঈশ্বরের বিভূতি স্বরূপকে চিনতে পারে ওই আত্মা নিশ্চয়াত্মক যোগযুক্ত হয়ে যায়।তখন ঈশ্বর আছে কি নেই, যদি থাকে কোথায়, কেমন দেখতে...ইত্যাদির বিন্দুমাত্র সংশয় বা সংকল্পও পর্যন্ত ওই আত্মার কখনও আসেনা। যে আত্মা জ্ঞানের আধারে ঈশ্বরকে চিনে নিয়েছে, বুঝে নিয়েছে ঐ আত্মা নিশ্চয়াত্মক হয়ে যায়, তার মন সবসময় ঈশ্বরের প্রতি যুক্ত থাকে, তার জীবন ঈশ্বরের সেবাতে সমর্পিত হয়ে যায়। অন্য আত্মাদের ঈশ্বরের জ্ঞান দিতে থাকে, নিজের মধ্যে ঈশ্বরীয় জ্ঞানের চর্চা করে। তখন ঐ আত্মার প্রসন্নতার সাথে সাথে আনন্দ, শান্তির অনুভব করে। নিজেদের মধ্যে যখন আমরা একে অপরের সাথে বার্তালাপ করি তখন সবসময় শুভ চিন্তাই করবো। তবে দুনিয়াতে একটা কথার প্রচলন আছে ,"পরচিন্তন পতনের কারণ, আত্মচিন্তন উন্নতির সিঁড়ি"
আত্মার প্রতিবিম্ব- দুই-ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী
-——— *ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী*
পর্ব দুই -
🍁 *এই জাগতিক সংসার থেকে আমরা অনেক কিছু বিষয়ের জ্ঞান আহরণ করে থাকি, যা আমাদের প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক সেই জ্ঞান অন্তরে প্রবেশ করে আমাদের ব্যক্তিত্ব গঠনে অংশগ্রহণ করে......*
🍁 *আমাদের চিন্তা ভাবনা মূলতঃ দুই প্রকারের হয়ে থাকে - সকারাত্মক এবং নাকারাত্মক। বাইরের পরিবেশ থেকে আমরা যে জ্ঞানপ্রাপ্ত করে থাকি, তা থেকেই আমাদের মনের মধ্যে এই দুই প্রকার চিন্তা ভাবনার উৎপত্তি হয়ে থাকে, যার বহিঃপ্রকাশ আমাদের ব্যক্তিত্বের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।*
🍁 *আজ আমরা এক অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করছি যেখানে ছোট ছোট কথাতেও আমরা অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে পড়ি, মন অশান্ত হয়ে যায়। এর কারণ নির্ভর করে থাকে আমরা কি ধরনের তথ্য আহরণ করেছি তার উপর। যদি আমরা কোনো দুঃখজনক সংবাদ শুনি তৎক্ষণাৎ তার খারাপ প্রভাব আমাদের মনের ওপর এসে পড়ে। এর ফলে আমাদের মনের মধ্যে ওই সংক্রান্ত চিন্তাভাবনার উৎপত্তি হতে শুরু করে এবং ব্যক্তিত্বের মধ্যে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।*
🍁 *এই জাগতিক সংসারে যা কিছু ঘটে চলেছে তা হয়তো আমরা পরিবর্তন করতে অপারগ, কিন্তু আমার জন্য কোন্ বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হবে তা আমরা নিজেরাই বিচার করতে পারি। যদি আমরা রাস্তার ধারের খোলামেলা পরিবেশে তৈরি হওয়া বিভিন্ন মুখরোচক লোভনীয় খাবার খাই, তাহলে আমরা এটাও জানি যে এই খাবারটি আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে।*
🍁 *অনুরূপভাবে আমরা আমাদের মনকেও যদি কোনো নাকারাত্মক খারাপ তথ্য প্রদান করি, তবে তা আমাদের ব্যক্তিত্বকে প্রভাবিত করবে। আজ চারিদিকে বিভিন্ন খারাপ ঘটনা ঘটে চলেছে যা অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের অপ্রয়োজনীয়। তবে কেনই বা আমরা সেই সমস্ত তথ্য গ্রহণ করে আমাদের ব্যক্তিত্বের হানি ঘটাবো।*
🍁 *আজ আমরা সবাই আমাদের সংস্কার বা দৃষ্টিকোণকে পরিবর্তন করতে চাই। তার জন্য কেবল মাত্র নাকারাত্মক চিন্তা ভাবনাই নয়, তার সাথে ঈর্ষা, দ্বেষ, অপরের প্রতি ঘৃণা ভাব থেকেও আমরা মুক্ত হতে চাই। কিন্তু এর প্রতিকার আমরা কিভাবে করব?*
🍁 *আজ থেকে আমরা এক দৃঢ়-সংকল্পে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবো যে, আত্মাকে আমরা সর্বদা সুস্বাস্থ্যকর ভোজনই দেবো, কখনোই তামসিক ভোজন দেব না।*
🍁 *আমাদের ব্যক্তিত্বে সেটাই প্রকাশ পাবে যেটা আমাদের মন চিন্তন করবে।*
*তাই প্রত্যেক দিনের সূচনা যদি আমরা সাকারাত্মক চিন্তাভাবনার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করি, তবে সারাদিন আমরা খুশিতে থাকবো এবং আমাদের চারিপাশের বাতাবরণকে আমরা পবিত্র ও সুখময় করে তুলবো।*
🍂🍂 *ওম শান্তি* 🍂🍂
আত্মার প্রতিচ্ছবি- তেরো- ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী
💫 *আত্মার প্রতিচ্ছবি* 💫
———— *ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী*
💠 *পর্ব - ১৩* 💠
🙏 *ওম শান্তি* 🙏
*সব সময় বাবা মায়ের অভিলাষ এটাই থাকে যে, আমি যেটা পাইনি আমার সন্তান যেন তার থেকে বঞ্চিত না থেকে যায়। নিজের সন্তানকে শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়ার পরিবর্তে,তাকে মানসিক দিক থেকেও শক্তিশালী করুন। তার, বাহিরের নয়...., আন্তরিক শক্তিকে বৃদ্ধি করতে হবে।৷ বাবা-মায়েরা সর্বদা এটাই চিন্তা করে যে, আমরা যেটা পাইনি আমাদের সন্তান যেন সেটা পায়। কিন্তু এটা চিন্তা করা দরকার যে আমার মধ্যে যে শক্তি কম আছে, তা যেন আমার বাচ্চার মধ্যেও না থাকে.........।*
*স্বাচ্ছন্দ্যে রাখা ঠিক আছে, কিন্তু ওই জিনিসের উপর নির্ভরশীল যেন না হয়, অর্থাৎ তাকে ছাড়া থাকতে পারবে না, এমনটা যেন না হয়। নিজের সন্তানকে রাজা তৈরি করতে হবে। রাজা সেই হয়, যে মন - বুদ্ধি - কর্মেন্দ্রিয়ের উপর রাজ্য করতে পারে। আজ আমরা নিজেদের বাচ্চাদের কে শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্যতো দিচ্ছি, কিন্তু দেওয়া এটা উচিত ছিল যে, সে যেন সব দিক থেকে শক্তিশালী হয়। শুধুমাত্র কোন বাহ্যিক বস্তুর ওপর নির্ভর করে নয়।*
*আমাদেরকে, আমাদের সন্তানকে সব রকম পরিস্থিতি থেকে, সব রকম ব্যক্তির সাথে সব রকম পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে চলা শেখাতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, তাকে শেখাতে হবে এ সি তেও শোয়া যায়, আবার এ সি ছাড়াও শোয়া যায়। দু - রকমের-ই অভ্যাস তাদেরকে শেখাতে হবে। যে জিনিস থেকে বেশি সময় যাবৎ আরাম পাওয়া যায়, সেটাই অভ্যাসে পরিণত হয়। তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে যায়, আর আত্মা আবেগের দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে। শারীরিক দিক থেকেও শক্তিশালী থাকতে পারে না.....!*
*আজ প্রত্যেক বাবা-মাকে এই বিষয়ে মনোনিবেশ করতে হবে যে, নিজের সন্তানকে শুধু স্বাচ্ছন্দ্যই না দেওয়া। তাকে মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকেও শক্তিশালী করা। কোন কিছুর প্রতি নির্ভরশীল হয়ে যেন দুর্বল না হয়ে পড়ে। তাকে সম্পূর্ণ সত্তামান্ তৈরি করা। শক্তিশালী আত্মা - সুস্থ-সবল শরীর - সুমধুর সম্পর্ক। আমাদের দেখতে হবে যে, কোন্ জিনিসটি পরিবর্তন করলেই সে দুর্বল না হয়ে শক্তিশালী হতে পারবে।*
*।। ওম শান্তি ।।*
💖🇲🇰💖🇲🇰💖🇲🇰💖🇲🇰💖
আত্মার প্রতিচ্ছবি- চৌদ্দ- ব্রহ্মাকুমারি সিস্টার শিবানী
——— *ব্রহ্মাকুমারি সিস্টার শিবানী*
🏛 *পর্ব - ১৪* 🏛
🙏 *ওম শান্তি* 🙏
*যখন ব্যক্তি আর পরিস্থিতি আমাদের পছন্দের মতো না হয়, তো তখন আমাদের মধ্যে রাগ উৎপন্ন হয়। আমাদের মন উদাস হয়ে যায়। আর যখন তারা আমাদের মনের মত হয়, তো তখন আমরা খুশি হয়ে যাই। আজ বাবা-মা তাদের সন্তানদের সব কিছু দিতে চান, দিয়েও দেন। সেই সন্তান যখন বড় হয়, তখন সে এটা চিন্তাও করতে পারে না যে, ব্যক্তি আর পরিস্থিতি একসময় তার সাথেও হতে পারে। কেননা তারা তো সব কিছুই পেয়ে এসেছে। পরবর্তীকালে এটা এক ধরনের মানসিক রোগের জন্ম দেয়। যখন এই বাচ্চারা সেই রকম বাতাবরণে যায়, যেখানে ব্যক্তি আর পরিস্থিতি তার পছন্দ অনুসারে থাকবে না। তখন সে বাইরে তো কিছুই করতে পারবেনা, অন্তরে নিজের মনকে শান্ত করতেও পারবে না। কেননা তার তো এই রকম পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করার অভ্যাসই নেই.......।*
*আজ আমরা বাচ্চাদের সেটাই দিয়ে থাকি,, যেটা ওরা আব্দার করে। কিন্তু বাবা-মাকে এ বিষয়ে অবশ্যই মনোনিবেশ করতে হবে যে, ওরা জীবনে প্রতিটি জিনিসই প্রাপ্ত করতে পারবে না, যেটা ওরা চাইবে... । এটা আমরা আমাদের জীবনেও দেখতে পাই যে, প্রত্যেক দিন সেই পরিস্থিতি আসে না, যেটা আমরা চাই। ওই বাচ্চার মধ্যে কি সেই ধরনের শক্তি থাকে, ওই পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করার জন্য। যেখানে তার সামনে থাকা ব্যক্তি সেই রকম হবে না, যেরকম সে আশা করেছিল........।*
*যদি এইরকম কোন অভ্যাস থাকে, যেটা বাচ্চাদের জন্য ঠিক নয়, (যেমন যদি বাচ্চা মোবাইল দেখতে দেখতে খাবার খায়, মোবাইল না পেলে খাবার খেতে চায় না। তখন বাবা-মা এটাই চিন্তা করে যে কিছুটা তো খেয়েছে। কিন্তু এটাই পরবর্তীকালে তার অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যায়। তাহলে এই অভ্যাস তার মধ্যে, কে তৈরি করে দিচ্ছে?তার বাবা মা, তাই না?*
*অল্প কিছু সহ্য করার পরিবর্তে সহজমার্গ খুঁজে নিচ্ছে, চলো কিছু তো খাচ্ছে, এই সংস্কারই পরবর্তীকালে তার কত বড় ক্ষতি করতে পারে) বাবা-মাকে প্রয়াস করতে হবে যে, তাদের সন্তান যেন সু সংস্কার শেখে.........।*
*একটা খুবই শক্তিশালী সকারাত্মক সংকল্প নিজের সন্তানের জন্য, "এই জিনিসটা ছাড়াই খাবার খাবে, খাবার খাচ্ছে, ভালোবাসার সহিত খাবার খাচ্ছে"৷ আমাদের এটাই আশীর্বাদ করতে হবে........।*
*আজ বাবা মা বলেন, এই হচ্ছে আমাদের সন্তান, এই জিনিসটা ছাড়া খাবার খেতেই চায় না। বাচ্চাটির প্রতি আপনার ভাবনা কী রকম ছিল?*
*তাই প্রথমে নিজের চিন্তারই পরিবর্তন চাই। আর রান্না করার সময় শুদ্ধ চিন্তা করতে হবে। এই চিন্তা করতে হবে যে, আমার সন্তান তো খুব ভালোবাসার সঙ্গে খাবার খাচ্ছে, এই জিনিসটা ছাড়াই খাবার খাচ্ছে, সব রকম সব্জি খাচ্ছে.......!*
*অভিভাবকরা তাদের মনে, আগে থেকেই সন্তান সম্বন্ধে এই স্থির বিশ্বাস তৈরি করে নিয়েছে যে, আমার বাচ্চা তো এটা ছাড়া কিছু খেতেই চায় না। প্রথমেই নাকারাত্মক চিন্তা তৈরি করে। এই স্থির বিশ্বাস কে পরিবর্তন করতে হবে। শুদ্ধ সকারাত্মক ভাবনা দিয়ে খাবার তৈরি করতে হবে, পরিবেশনও করতে হবে। তবেই ঐ কুসংস্কার সমাপ্ত হবে.....!*
🙏 *।। ওম শান্তি।।* 🙏
⛲⛲⛲⛲⛲⛲⛲⛲⛲
আত্মার প্রতিচ্ছবি- ছয়- ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী
————— *ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী*
🔘 *পর্ব - ৬* 🔘
*ওম শান্তি*
*আমাদের মন যদি কোন খারাপ কিছু চিন্তা করে, নাকারাত্মকতার দিকে যায়, মন দুঃখী হয়ে যায়, ভারী হয়ে যায়, আমাকে সেই সময় মনকে পবিত্র চিন্তা দিতেই হবে। না হলে আত্মা ওই নাকারাত্মকতার প্রভাবে দুর্বল হয়ে যাবে। আমাদের আত্মাকে শক্তিশালী বানানোর জন্য আমাদের মনের মধ্যে সকারাত্মক তথ্যের সঞ্চার ঘটাতে হবে....।*
*যদি আমার শরীর কোনো কারণে অসুস্থ থাকে, এবং তার জন্য আমাকে কোন জিনিস থেকে বিরত থাকতে হবে, কিন্তু আমি যদি তা না করি, তাহলে কি আমার শরীর সুস্থ হয়ে উঠবে। সেই রকমই আমাদের আত্মার মধ্যে যখন নাকারাত্মক চিন্তা চলে এবং আমি সেই বিষয়ে নিরন্তর চিন্তা করতেই থাকি, চারিদিক থেকে আরও নাকারাত্মক তথ্য গ্রহণ করতেই থাকি, তাহলে আত্মা দুর্বল হয়ে যাবে। আমাকে এটা পরিবর্তন করার জন্য তৎক্ষণাৎ কোন সকারাত্মক তথ্য গ্রহণ করতেই হবে......।*
*যদি আমি কোন কথা থেকে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি, বা আমার মন দুখি - অশান্ত হয়ে যাচ্ছে। আমাকে ওই সব চিন্তা করা যাবে না, যার দ্বারা আমি দুঃখী হচ্ছি। আমি চেষ্টা করছি কোন ভাল কথা চিন্তা করার, কিন্তু তা হয়ে উঠছে না। এখন যদি আমি ওই সময় কিছু ভালো তথ্য পড়ে নিই, শুনে নিই, যদিও বা সেই সব তথ্য আমার সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত নয় তথাপি সেটা হল পবিত্র চিন্তন যার দ্বারা আত্মা শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং তার দ্বারাই সেই দুঃখী মন কে নিরাময় করা সহজ হবে। সেই সকারাত্মক চিন্তন থেকে আত্মা ওই সময় শক্তি প্রাপ্ত করবে.....।*
*যখনই আমাদের মানসিক শক্তি কমতে থাকে, যদি সেই সময়েই আত্মার মধ্যে ভালো ভালো কিছু তথ্য সঞ্চার করা হয়, তবে আত্মা শক্তিশালী হয়ে উঠবে, তার দুর্বলতাও সমাপ্ত হয়ে যাবে.....।*
*আজ থেকে আমরা এই বিষয়ে মনসংযোগ করব যে, আমাদের কাছে সর্বদা এমন কিছু থাকে, যথা - সকারাত্মক চিন্তন, জ্ঞানের কিছু কথা, প্রেরণাদায়ী কোন জিনিস, যখনই মন উদাস হয়ে যাবে বা কোন কারণে বিরক্ত হয়ে যাবে, তৎক্ষণাৎ পরমাত্মাকে বল, "তুমি এর থেকে আমাকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কোন পথ বলে দাও", তারপর ওই সব সকারাত্মক চিন্তন গ্রহণ করো....।*
*এর দ্বারাই আত্মার মধ্যে শক্তি সঞ্চারিত হবে, আত্মা শক্তিশালী হয়ে উঠবে।*
💠 ।। *ওম শান্তি* ।। 💠
আত্মার প্রতিচ্ছবি - চার - ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী
💥 *আত্মার প্রতিচ্ছবি* 💥
————— *ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী*
💫 *পর্ব -৪* 💫
💎 *ওম শান্তি* 💎
💞💞 *আমরা এটা মনে করি যে, আমরা সেই সমস্ত কাজের জন্য দায়ী, যে কাজগুলি আমরা করি, কিন্তু আমরা সেইসব কর্মের জন্য দায়ী নয়, যে গুলি আমরা অন্তর-মনে করবো বলে চিন্তা করি, কিন্তু এটাই সত্য যে, আপনি সেই গুলির জন্যও দায়িত্ববান, যেগুলি আপনি চিন্তা করেন। কেননা আপনি যা কিছু কাজ করেন সেটা আপনার চিন্তার উপরই তো নির্ভর করে।*
💞💞 *আমরা যা কিছু কাজ করি তা সম্পূর্ণ আমাদের নির্বাচন, কিন্তু আমাদের মানসপটে আমরা সারাক্ষণ যা কিছু চিন্তন করি সেটাই বাণী এবং কর্মের মাধ্যমে সর্বসমক্ষে প্রকাশিত হয়।*
💞💞 *একটি গাছে পাতা ফুল ফল হয়, কিন্তু ওই গাছটির গুণগত মান কিসের উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়? বীজের উপর। আপনি কি রকম বীজ বপন করবেন, সেটা সম্পূর্ণ আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করে। সুতরাং যদি আপনি গোলাপ গাছের বীজ বপন করেন তবে সেই বীজ থেকে গোলাপ গাছের চারাই জন্ম গ্রহণ করবে, অন্য গাছ তো জন্মাবে না।*
💞💞 *অনুরূপভাবে, মনের মধ্যে আমরা যে চিন্তন করে থাকি, সেটাই আমাদের স্বরূপে প্রকাশিত হয়। যদি আমরা কোন ব্যক্তির প্রতি শুভ চিন্তা করি তবে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আমরা তার সাথে ভালোভাবে কথা বলতে পারব এবং আমাদের ব্যবহারের মধ্যেও শালীনতা থাকবে। এই সবকিছুর মূল কারণ হলো ওই ব্যক্তির প্রতি আমার শুভ ভাবনা ছিল।*
💞💞 *যদি আমি কোনো ব্যক্তির প্রতি খারাপ বা কু-চিন্তা করে থাকি, যদিও আমি তার প্রতি কি চিন্তা করব সেটি সম্পূর্ণ ভাবে আমার পছন্দের উপর নির্ভরশীল তথাপি আমি তার প্রতি কুচিন্তা করে নাকারাত্মক পরিবেশ প্রস্তুত করি এবং পরক্ষণেই যদি আমি এই চিন্তা করি যে, আমি তার সাথে ভালোবাসার সহিত বার্তালাপ করবো বা প্রেম পূর্ণ ব্যবহার করব, কিন্তু তা আর সম্ভব হয়ে ওঠে না। কেননা বিকল্প উপায় আমাদের চিন্তা করার সময় ছিল। যখনই বার্তালাপ শুরু হবে, একটু কিছু উপর-নীচ হলেই আমাদের মুখ থেকে তার প্রতি কুবাক্য নির্গত হয়ে যাবে, কেননা তার প্রতি আমার চিন্তা নাকারাত্মক ছিল।*
💞💞 *আমাদের কাছে বিকল্প চিন্তা করার উপায় তো আছে, কিন্তু সেই বিকল্প চিন্তা কে কর্মে প্রয়োগ করার জন্য চিন্তন নেই। তথ্য সংগ্রহন, সংগৃহিত তথ্যের চিন্তন এবং তদনুরূপ কর্মে প্রতিফলন - এই তিনটি পর্যায় আমাদের বিশেষ নিরীক্ষণে রাখতে হবে। কেননা আমি যে রকম চিন্তা করবো সেটাই আমার কর্মে প্রতিফলিত হবে।*
💞💞 *আজ থেকে আমরা প্রাতারম্ভে আমাদের আত্মার মধ্যে ভালো ভালো জ্ঞান ধারণ করব, সাকারাত্মক তথ্য প্রদান করব যার দ্বারা আত্মা শক্তিশালী হয়ে উঠবে। যা কিছু আমরা পড়ব, দেখবো বা শুনবো সেগুলি যাতে সাত্বিক হয় এবং সাকারাত্মক হয়, সেই অভ্যাস আমরা নিয়ত করতে থাকবো।*
💞💞 *এই কথাটি আমাদের স্মরণে রাখতে হবে যে, আত্মার প্রকৃত ভোজন হলো শুদ্ধ এবং সাকারাত্মক তথ্য।*
⛲ *ওম শান্তি* ⛲
💎👑💎👑💎👑💎👑💎
আত্মার প্রতিচ্ছবি- তিন- ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী
———— *ব্রহ্মাকুমারী সিস্টার শিবানী*
🌲 *পর্ব –৩* 🌲
🎯🎯 *বর্তমান সময়ে আমাদের জীবনের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো অপরকে প্রভাবিত করা। তার জন্য নিজেকে অনেক জ্ঞানী প্রমাণ করার তাগিদে বাইরের এই দুনিয়া থেকে আমরা অনেক জ্ঞান অর্জন করে থাকি। কিন্তু আমাদের এটা জানা আছে কি, আমাদের অন্তরের জগতে কী চলছে?*
🎯🎯 *বাইরের দুনিয়ায় যা কিছু ঘটে চলেছে, তা আমরা পরিবর্তন করতে অপারগ। কারণ তা আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে না। বাইরের জগতের এই সকল ঘটনা আমাদের অন্তর মনের চিত্রপটে প্রভাব বিস্তার করে।*
🎯🎯 *বাইরের দুনিয়ায় যা কিছু ঘটে চলেছে তা যদি আমরা গ্রহণ করি, তবে আমাদের অন্তর্জগৎ কি রকম হবে? ওই রকমই হবে তাই না!*
🎯🎯 *যা কিছু আমরা পড়ি, শুনি বা দেখি, সেটাই আমাদের চিন্তা ভাবনা এবং ব্যক্তিত্বে প্রকাশ পায়। আমাদের চিন্তা ভাবনার বিষয় অনুসারে আমাদের চারপাশের পরিবেশ এবং বায়ুমণ্ডল গঠিত হয়। আজ দুনিয়াতে যা কিছু ঘটে চলেছে তা দেখে আমরা নিন্দা করি, গ্লানি করি। কিন্তু আমাদেরও এক্ষেত্রে অনেক দায়িত্ব থেকে যায়, কেননা আমরা সেই সব তথ্য গ্রহণ করে আমাদের ব্যক্তিত্ব গঠন করি এবং পুনরায় তা ওই দুনিয়াতেই প্রত্যার্পণ করি।*
🎯🎯 *যদি আমরা নাকারাত্মক চিন্তা ভাবনার মধ্যে প্রবেশ করি, তবে আমাদের আত্মার শক্তি দুর্বল হয়ে যায়। আজ আমরা সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছি। যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সট্রাগ্রাম প্রভৃতি...।*
*যেখানে অনেক রকমের তথ্যের আদান-প্রদান হয় এবং নিমেষের মধ্যে তা একজনের থেকে বহু জনের কাছে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আমাদের এই জ্ঞান থাকে যে, সেই সকল প্রদেয় তথ্য গুলির মধ্যে কোনটি আমাদের গ্রহণযোগ্য এবং কোনটি গ্রহণযোগ্য নয়। নাকারাত্মকতা থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সেই সমস্ত তথ্য গুলি পড়ার আগেই মুছে দিতে হবে, যেগুলি থেকে আমাদের মধ্যে নাকারাত্মক চিন্তা ভাবনার উৎপত্তি হয়। অন্যদিকে সাকারাত্মক তথ্যগুলিকে যৌক্তিকতার সহিত গ্রহণ করতে হবে।*
🎯🎯 *আমরা আমাদের আশেপাশের জনগণকে পরিবর্তন করতে সক্ষম নই, দুনিয়াতে যা কিছু ঘটে চলেছে তা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, কিন্তু বাইরের সমাজ থেকে কোন কোন জিনিস আমি গ্রহণ করবো তা আমরা আমাদের পছন্দের তালিকায় রাখতে পারি।*
🎆🎆 *"আমি মাস্টার সর্বশক্তিমান আত্মা"*
*এই দৃঢ় নিশ্চয়ের সাথে আমাকে, আমার চারপাশের পরিবেশকে সাকারাত্মকতায় ভরিয়ে তুলতে হবে।*
🇲🇰 *ওম শান্তি* 🇲🇰
🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁
ভালো অথবা মন্দ কর্মের ফল
🌻🍃🌻🍃🌻🍃🌻🍃🌻🍃🌻
*অমূল্য মোতি*😊
৩০ - ০৭ - ১৯
*যে এই নিয়ম খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে যে, প্রতিটি ভালো অথবা মন্দ কর্মের ফল অবশ্যই পাওয়া যায়, এমন মানুষ কখনোই কারোর খারাপ করতে পারবে না, বরং অনেক বেশী ভালো কাজ করার চেষ্টা করবে ।*
🙏🙏ওম শান্তি 🙏🙏
🌻🍃🌻🍃🌻🍃🌻🍃🌻🍃🌻
প্রকৃত সৌন্দর্য
৩১ - ০৭ - ২০১৯
*আন্তরিক সৌন্দর্যই হলো প্রকৃত সৌন্দর্য, সুন্দর বস্ত্র তো কেবল বাহ্যিক দর্শন করায়, বস্ত্রের মূল্য যতই হোক না কেন, আমাদের প্রকৃত মূল্য তখনই হবে, যখন অন্যের প্রতি আমাদের ব্যবহার সুন্দর হবে । সুন্দর সম্পর্কের জন্য আমরা সকলের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহারই করবো ।*
💥💥ব্রহ্মাকুমারীজ 💥💥
❤💚❤💚❤💚❤💚❤💚
সম্পর্কে কটুতা
🙏ওম শান্তি 🙏
*টক দই দিয়ে যদি দই জমানো হয়, তাহলে পরের দিন টক দইই পাওয়া যাবে, পরিবর্তন যদি না করা হয়, তাহলে সারাজীবন টক দইই খেতে হবে ।*
*কারোর প্রতি রাগ যদি থাকে, পুরানো কথা যদি ধরে রাখি ----চিন্তার যদি পরিবর্তন না করা হয়, তাহলে সারাজীবনই সম্পর্কে কটুতা থাকবে ।*
*বিষয় ছোটো হোক বা বড় ---একটা সুন্দর চিন্তা ----সম্পর্ককে মিষ্টতায় ভরিয়ে তুলবে ।*
🌻🌻 *বি.কে.সিস্টার শিবানী*🌻🌻
শান্তি এবং সুখ
অাজকের মিষ্টি মোতি*💧
২৩ শে জুলাই :-- *সমস্ত দুঃখের ঝড়ের পিছনে শান্তি এবং সুখ লুকিয়ে থাকে, এই ঝড়ের থেকে পিছিয়ে নয়, ঝড় ভেদ করে এগিয়ে চলুন ।*
🙏🙏ওম শান্তি 🙏🙏
🌹🌹ব্রহ্মাকুমারীজ
অভিযোগ
🙏ওম শান্তি 🙏
*আমরা যতো ধীরে ধীরে নিজেকে সঠিকভাবে বুঝতে শুরু করি, ততই আমাদের অন্য মানুষের প্রতি অভিযোগ কম হতে থাকে ।*
🌻🌻 *বি.কে.সিস্টার শিবানী*🌻🌻
🌷✨🌷✨🌷✨🌷✨🌷✨🌷
শক্তিশালী মানুষ
অমূল্য মোতি*👌
২৩ - ০৭ - ১৯
*যিনি খুশীর পরিবেশ তৈরী করার ক্ষমতা রাখেন, বাস্তবে তিনিই শক্তিশালী মানুষ প্রতিপন্ন হওয়ার যোগ্য ।*
👍❤😇
🌻☘🌻☘🌻☘🌻☘🌻☘🌻
আমরা এই দুনিয়াকে নিজের ইচ্ছানুসারে চালানোর প্রচেষ্টা করবো না
❤💚❤💚❤💚❤💚❤💚❤
☀☀ *আত্মকৃতি স্নেহ - মোতি*☀☀
২৩ - ০৭ - ১৯
*আমরা এই দুনিয়াকে নিজের ইচ্ছানুসারে চালানোর প্রচেষ্টা করবো না, বরঞ্চ নিজেকে এই দুনিয়ার অনুকূল তৈরী করে জীবনের সমস্তরকম রংকে স্বীকার করবো এবং প্রত্যেক ব্যক্তি এবং তাদের ব্যবহারকে স্বীকার করে নিয়ে সদা খুশীতে থাকবো এবং অন্যদের খুশীতে রাখবো ।*
🌸🌸ব্রহ্মাকুমারীজ 🌸🌸
❤💚❤💚❤💚
পরিস্থিতিকে আমরা কিভাবে মানিয়ে নিতে শিখবো?
একদিন এক শিষ্য তার গুরুকে বললেন ---গুরুদেব, এক ব্যক্তি আশ্রমের জন্য একটি গরু দান করতে চাইছেন । গুরুদেব বললেন --- খুব ভালো কথা, আশ্রমের সকল শিষ্যদের দুধের সংস্থান হবে । কিছুদিন পরে সেই শিষ্য এসে গুরুকে জানালেন, গুরুদেব, যে ব্যক্তি গরু দান করেছিলেন, তিনি তার গরুটি ফেরত চাইছেন । এই কথা শুনে গুরুদেব বললেন ---খুব ভালো । গোবরের ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্ত হওয়া গেলো ।*
*পরিস্থিতি পরিবর্তন হলেও তার প্রভাব যেন মন:স্থিতির উপর না আসে । যে কোনো পরিস্থিতিকে যদি আমরা মানিয়ে নিতে শিখি, তাহলে দুঃখ স্বাভাবিকভাবেই সুখে পরিবর্তন হয়ে যাবে । "সুখ আর দুঃখ" এই দুইই আমাদের মনের অবস্থা ।*
🙏🙏 ওম শান্তি 🙏🙏
🌀🌀🌀🌀🌀🌀🌀🌀🌀🌀
রাজযোগর প্রাপ্তি --অষ্ট শক্তি
রাজযোগর প্রাপ্তি --অষ্ট শক্তি
~~~~~~`~`~~~~~~~~~~~~~~~~
রাজযোগ অভ্যাসের মাধ্যমে সুখ-শান্তি তো পাওয়াই যায় এবং তার সাথে অনেক প্রকারের আধ্যাত্মিক শক্তিও প্রাপ্ত হয়ে থাকে - যার মধ্যে প্রধান এই অষ্টশক্তিগুলি :
১. সংকীর্ণ করার শক্তি ( power to withdraw) :
যে ভাবে কচ্ছপ (tortoise) তার নিজের অঙ্গগুলোকে যখন খুশি ছড়িয়ে দিতে পারে, আবার যখন খুশি তা গুটিয়েও নিতে পারে। তেমনও এক রাজযোগীও যখন খুশি নিজের কর্মেন্দ্রিয় দিয়ে কাজ করে আবার নিজের মনের ইচ্ছানুযায়ী বিদেহী অবস্থাতেও আসতে পারে।
২. গুটিয়ে নেবার শক্তি ( power to pack up) :-
রাজযোগী নিজের বুদ্ধিকে এই বিশাল জাগতিক দুনিয়াতে না ছড়িয়ে এক পরমাত্মা বা আত্মিক স্থিতিতেই যোগযুক্ত থাকে। এই কলিযুগী দুনিয়া থেকে নিজের বুদ্ধি আর সংকল্পের বিছানাপত্র (beding) গুটিয়ে নিয়ে পরমধামে যাবার জন্য (ready) তৈরী থাকে।
৩. সহ্য করার শক্তি ( power to tolerate) :-
যেমনি গাছকে পাথর মারলে সে সর্বদা ফলই দেয়, সেই ভাবে রাজযোগীও সর্বদা অপকারীদেরও উপকার করে থাকে। রাজযোগীরা সর্বদাই অন্যদের জন্য শুভ-ভাবনা আর শুভ-কামনাই রাখেন।
৪. ক্ষমতা সমন্বয়ের শক্তি (power to adjust) :-
রাজযোগী সর্বদা সমুদ্রের মতন নিজের দৈবী কুলের মর্যাদার মধ্যে থাকে, আর অন্য আত্মাদের অবগুণগুলি না দেখে শুধু তাদের গুণগুলিকেই ধারণ করে।
৫. বৈষম্যের শক্তি ( Power to discriminate) :-
যেমনি এক জহুরী গয়নাকে পরখ করে তার আসল বা নকলকে বলে দেয়, ঠিক সেই ভাবেই রাজযোগীও মনুষ্য আত্মাদের বিষয়ে তাদের আসলটাকে চিনতে পারে। সে সর্বদা জ্ঞান রত্নকেই গ্রহণ করে। অজ্ঞানতায় নিজের বুদ্ধিকে এদিক-ওদিক ফাঁসিয়ে রাখে না।
৬. নির্ণয় কবার শক্তি (power of decision-making) :-
রাজযোগী উচিত বা অনুচিত কথার নির্ণয় তাড়াতাড়ি নিতে পারে। সে ব্যার্থ চিন্তন আর পর-চিন্তন থেকে সর্বদাই মুক্ত থাকে।
৭. মুখোমুখি বা সন্মুখীন করার শক্তি ( power to face) :-
রাজযোগী কোনও পরিস্থিতিতেও বিচলিত হয় না। তার আত্মার প্রদীপ সর্বদাই প্রজ্বলিত থাকে, আর সে অন্য আত্মাদেরও জ্ঞানের প্রকাশ দিতে থাকে।
৮. সহযোগিতা করার শক্তি (power to co-operate) :-
একমাত্র রাজযোগীরই নিজের থেকেই অন্য আত্মাদের সহযোগ প্রাপ্ত হতে থাকে আর সে তখন এই কলিযুগী পাহাড়কে সত্যযুগী সংসারে পরিবর্তন করার জন্য নিজের পবিত্র জীবন রূপী আঙ্গুল অন্যদের উদ্দেশ্যে বাড়িয়ে দেয়।